ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘অপরাধে জড়াচ্ছে’ পুলিশ, জনমনে আতঙ্ক

পুলিশ 'অপরাধে জড়িত' সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ১৫-১০-২০২৩ ০৫:৩৬:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-১০-২০২৩ ০৫:৩৬:৪১ অপরাহ্ন
পুলিশ 'অপরাধে জড়িত' সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত ছবি: এস এ টিভি হতে সংগৃহীত
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বেশ কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ বহিস্কার করা হয়েছে কাউকে, কারো বিরুদ্ধে মামলা চলছে৷

আর তাই নতুন করে আলোচনায় আসছে পুলিশ সদস্যদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা৷ পোশাক পরে পুলিশের এই 'অপরাধে জড়িত' হওয়ার ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন৷

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না৷ যে কারণে বার বার পুলিশের কিছু সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসছে৷

তাছাড়া, ইউনিট পর্যায়ে সুপারভিশনের অভাব  দেখা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে৷ বিশ্লেষকদের পরামর্শ, পুলিশের ইমেজ ফেরাতে এই অপারাধের বিচার করতে বিশেষ আইন করা যেতে পারে৷

ভাড়ায় অপরাধে জড়াচ্ছে পুলিশ!

ঘটনাটি ৯ অক্টোর রাজধানীর শ্যামপুর দোলাইপাড় এলাকার৷ অভিযোগ আছে, আবুল কালাম নামে এক ব্যবসায়ীর ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে তারই বড় ভাই মোশাররফ হোসেন পুলিশের এক এএসআইকে ভাড়া করেন৷ তিনি গুলশান থানার এএসআই দোলোয়ার হোসেন৷ তারা পকিল্পনা করে ওই টাকা ছিনতাই করেন৷ এএসআই দেলোয়ার ছিনতায়ের সময় আরো এক পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়েছিলেন৷ ছিনতাইয়ের পর তারা টাকা ভাগ বটোয়ারা করে নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে৷

এই ঘটনায় এএসআই দেলোয়ার এবং এক পুলিশ কনেস্টবলসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার পল্টনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-শাখায় ওই ঘটনা ঘটে৷ এই ঘটনায় দুই পুলিশ কনেস্টবলের সঙ্গে তাদের তিনজন সোর্সকেও আটক করা হয়েছে৷ ওই দুই কনেস্টবল পুলিশের পোশাক পরেই ছিনতাইয়ে অংশ নেন৷

তারা তাদের সোর্সদের নিয়ে ব্যাংকে ঢুকে একজন গ্রাহককে আটকের নামে তুলে নিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই করেন৷ গ্রাহক পরে মামলা করলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের সনাক্ত এবং আটক করা হয়৷ আটক দুই পুলিশ কনেস্টবল ডেমরা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন৷

এদিকে পুলিশ এক এসএআই প্রাইভেট কার ছিনতাই করে গাড়িতে থাকা স্বর্নের বার চুরির সাথে জড়িত তদন্তে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ ঢাকার গাবতলী থেকে দেড় বছর আগে ছিনতাই হওয়া একটি প্রাইভেট কার থেকে ৩১টি স্বর্নের বার খোয়া যাওয়ার ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের এক এসআই-এর জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে৷ গাড়িটি তখন পাওয়া গেলেও স্বর্নের বার উদ্ধার করা হয় গত জুলাই মাসে পুলিশের এসআই আশরাফুল ইসলামের বাসা থেকে৷ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷

গত বছরও কতিপয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে৷ গত বছরের ১৭ অক্টোবর মতিঝিলের একটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে পুলিশ ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে৷ তিনজন পুলিশ কনেস্টবল তখন এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের নামে তুলে নিয়ে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে৷ ওই তিন পুলিশ কনেস্টবলকেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত এবং আটক করা হয়৷

পাঁচ পুলিশ সদস্য ও তাদের সহযোগীরা বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পথে দুবাইফেরত এক যাত্রীর মাইক্রোবাস থামিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ২২ লাখ টাকার মালামাল ও বিদেশি মুদ্রা ছিনতাই করার অভিযোগ আছে৷ তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল সালাউদ্দিন ও সুমন এবং তাদের সহযোগী তোফাজ্জল, আলী ও সাইফুল৷ তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে৷

গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার এএসআই মো. জহিরুল হক, কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন ও কায়সার হামিদকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয়৷ তারা শেখ ফরিদ নামে এক ব্যাসায়ীকে ইয়াবা বিক্রেতা আখ্যা দিয়ে অটোরিকশায় তুলে মারধর করেন৷ পরে ব্যবসায়ীর কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন৷

ওই বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ফোন ছিনতাই করতে গিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ায় জনতার হাতে ধরা পড়েন আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের (এপিবিএন) নিরঞ্জন দাস নামে এক সদস্য৷ তিনি ভয় দেখিয়ে এক যুবকের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিলেন, এমনটাই অভিযোগ৷

শুধু ছিনতাই নয়, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো, মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মদক দিয়ে মামলা করে টাকা আদায়, অজ্ঞাত আসামির তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দিয়ে অর্থ আদায়, নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগ আছে অনেক দিন ধরেই৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বুধবার শ্যামপুরে ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাংবাদিকদের বলেন, ''কার কী পরিচয় সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়৷ sa/t



 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ